বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ আড়িয়াল খাঁ নদী ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মানচিত্র পাল্টে যাচ্ছে। উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের সিংহেরকাঠী, লোহালিয়া গ্রাম ও চাঁদপাশা ইউনিয়নের রফিয়াদী, আরজি কালিকাপুর ও ভবানিপুর গ্রামের প্রায় ৫ কিলোমিটার জুড়ে ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে রহমতপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহি ছোট মীরগঞ্জ বাজার নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় পার্শবর্তী এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জোয়ারের পানি ও নদীর ¯্রােত বৃদ্ধি পাওয়ায় গত শুক্রবার থেকে প্রবল ভাঙন দেখা দেওয়ায় বর্তমানে ছোট মীরগঞ্জ বাজারটি আবারো ঝুঁকিতে পরেছে। সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সিংহেরকাঠি গ্রামের নদী পারের ঘর-বাড়ি অনত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে , গাছপালা কেটে ফেলা হচ্ছে। গত দুইদিনের ভাঙনে ছোট মীরগঞ্জ বাজারের একটি মসজিদ ও কয়েকটি দোকান বিলীন হয়েছে। ঝুকিতে রয়েছে ২৬টি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, পানের বরজ, ফসলি জমি ও বসত ভিটা হারা মানুষগুলো দূশ্চিন্তায় প্রহর গুনছে। ছোট মীরগঞ্জ বাজারের মুদি ব্যবসায়ী আলা বক্স বলেন, তার প্রতিষ্ঠান চার বার ভেঙেছে। এবার ভাঙনের কবলে পরলে পথে বসতে হবে। আমরা গ্রামবাসি অস্তিত্ব সংকটে পরতে যাচ্ছি। কেউ কেউ পরিবার নিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ সূর্য আলম বলেন, আমার ও বড় ভাই শাহ আলমের ঘর ভাঙন কবলে পরেছি। এছাড়া গত দুই দিনে এই এলাকার কয়েকটি পরিবার ভাঙনে নিঃস্ব হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেউ ২কেজি চাল দিয়ে সাহায্য করেনি। আমাদের খোঁজ নেয়নি কেউ। ভাঙন কবলিত সিংহেরকাঠী এলাকার ইউপি সদস্য জামাল হোসেন পুতুল বলেন, প্রতিবছরই নদী ভাঙ্গনে এলাকার ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে থাকে। গত বছর ২০২০ সালে ছোট মীরগঞ্জ সম্পূর্ণটা ভেঙ্গে গেলে বাজারটি সড়িয়ে নেয়া হয়। কিন্তু এক বছর পার না হতেই আবার ভাঙনের কবলে পরেছে। ইতিমধ্যে বাজারটির ৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্বমিল, মসজিদ, বসতঘর ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অবহিত করা হলেও এখন পর্যন্ত কার্যকরি কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। চাঁদপাশা ইউনিয়নের ময়দানের হাট বাজারের রাস্তার মাথা থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রায় ২ কিলোমিটার জুড়ে ভাঙনের কবলে পরেছে। দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহন না করলে জোয়ারের পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে ময়দানের হাট ও আরজি কালিকাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভাঙনের কবলে পরতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। নদী ভাঙন এলাকার শতাধীক পরিবার গৃহ ও ভূমীহীন হওয়ার আশংকায় রয়েছে। চাঁদপাশা ইউপি চেয়ারম্যান আনিচুর রহমান সবুজ বলেন, আমার ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের শতাধীক পরিবার ইতিমধ্যে গৃহহীন হয়ে পরেছে। নদী ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন না করলে চাঁদপাশা ও রহমতপুর ইউনিয়নের মানচিত্র হুমকির মূখে পরবে। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন , মীরগঞ্জ থেকে দক্ষিন দিকে ৩কিলোমিটার আড়িয়াল খাঁ নদী ভাঙন রোধে বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
Leave a Reply